ব্যাংক ঋণের গ্যারান্টার হতে যা জানা প্রয়োজন
- আপডেট সময় : ০১:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
- / ৭৬৯২ বার পড়া হয়েছে
একবার ঋণের প্রয়োজনে ২০২০ সালে ব্যাংকে আবেদন করেন জাকির হোসেন। তার সেই আবেদন আটকে যায় সিআইবি রিপোর্টের কারণে। সিআইবি (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) কি? এটি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত একটি নীতিমালা যার মাধ্যমে গ্রাহক পূর্বে কোনো ঋণ নিয়েছিল কি না বা কোনোভাবে খেলাপি হয়েছে কিনা এসব তথ্য। আগে কখনো নিজের প্রয়োজনে ঋণ নেয়নি জাকির হোসেন। তবে কর্মক্ষেত্রে তার এক সহকর্মীর জামিনদার হয়েছিলেন। সেই সহকর্মী সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় জাকির হোসেনকে পরতে হয়েছে এক ধরনের অনাকাঙ্খিত সমস্যায়। যা তৈরি হয়েছে শুধুমাত্র জামিনদার হওয়ার কারনেই। জীবনের নানা সময়ে এরকম উটকো ঝামেলায় অনেকেই পরেন। ব্যাংক ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত না হওয়া এবং অসচেতনতার কারণে এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন যে কেউ।
তাই কারও ব্যক্তিগত ঋণের জামিনদার হওয়ার আগে কিছু বিষয় জেনে নেয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পর ঋণ—গ্রহীতা যদি তা পরিশোধ করতে না পারেন, তবে তার দায়ভার জামিনদারের ওপর আসবে বলে ২০০৩ সালের অর্থ ঋণ আদালত আইনের ৬—এর ৫ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথমে ঋণ গ্রহীতা ও জামিনদারের বিরুদ্ধে চেকের মামলা করা হয় এবং পরে করা হয় অর্থঋণ মামলা। এইসব উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে গনমাধ্যমে বিজ্ঞাপন ছাপিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে—
* ঋণ নেয়ার কারণ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জামিনদারকে জানতে হবে। একইসঙ্গে ঋণ গ্রহীতা ঋণের অর্থ ফেরত দিতে পারবে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন ।
* জামিনদার হওয়ার আগে ঋণ সংক্রান্ত চুক্তির শর্ত ভালো করে জানা ও বোঝা উচিত। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের মতামত নেয়া যেতে পারে।
* সাদা কাগজে সই করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
* ঋণ গ্রহীতা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে জামিনদাতা তা পরিশোধে বাধ্য হবে। সেক্ষেত্রে ওই পরিমাণ অর্থ দেয়ার সামর্থ্য আছে কি না তাও ভেবে দেখা প্রয়োজন।
*এছাড়াও জামিনদার হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লিখিতভাবে সম্ভাব্য দায়—দায়িত্ব সম্পর্কেও জেনে নেয়া প্রয়োজন।
যেকোনো মানুষকে সহায়তা করা মহৎ কাজ। তবে কারো ব্যাংক লোনের জামিনদার হতে অবশ্যই জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।